,

‘গৃহবধূকে হত্যা’ পালিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ:  যৌতুক চেয়ে না পেয়ে মনিকা বেগম (২৬) নামে তিন মাসের অন্ত:সত্ত্বা এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। লাশ ঘরের মধ্যে রেখে পালিয়ে গেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাট্টাইধোবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মনিকা নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাংখারচর গ্রামের খোকন শেখের মেয়ে।

নিহতের পরিবার জানিয়েছে, ২০১৮ সালে প্রেম করে মনিকাকে বিয়ে করেন উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের বাট্টাইধোবা গ্রামের হায়দার মুন্সীর ছেলে হাসিব। তাদের আড়াই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। হাসিব প্রায়ই মনিকার কাছে টাকা দাবি করে। এ নিয়ে হাসিব মাঝে-মধ্যেই মনিকার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। এ নিয়ে কয়েকবার থানায় অভিযোগ ও গ্রাম্য সালিশও হয়েছে। বেশ কয়েকবার মনিকা তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে হাসিবকে দিয়েছেন। ঘটনার তিন দিন আগে হাসিব বিদেশ যেতে টাকার জন্য মনিকাকে চাপ দিতে থাকে। মনিকার দরিদ্র ও বৃদ্ধ বাবা টাকার যোগান দিতে না পারায় মনিকাকে মারধর করে হাসিব ও তার পরিবারের লোকজন।

মনিকার বোনের ছেলে মো. শামীম হোসেন বলেন, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে আমার মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে খালা মনি বলেন ‘আমাকে মেরে ফেললো। তোরা এসে আমাকে বাঁচা।’ এরপর আমি আমার কয়েকজন বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে খালা মনির বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি ঘরের মেঝেতে খালা মনির লাশ পড়ে আছে। গলায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। বাড়িতে কেউ নেই। পরে বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানালে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কাশিয়ানী থানা থেকে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।’

নিহতের বাবা খোকন শেখ (৭০) বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই হাসিব ও তার পরিবারের লোকজন টাকার জন্য আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। বিষয়টি নিয়ে আমি কয়েকবার সালিশ ডেকেছি। তাতেও কোন কাজ হয়নি। হাসিব ও তার পরিবারের লোকজন আমার মেয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি।’

কাশিয়ানী থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। গলায় দাগ রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়নি।’

-লিয়াকত হোসেন লিংকন

এই বিভাগের আরও খবর